প্রতিবেদক: Raisul Islam Shohag | ক্যাটেগরি: বৃহত্তর কুমিল্লা | প্রকাশ: 19 Sep 2025, 9:42 AM
ব্রাহ্মণপাড়ায় ফের ছড়াচ্ছে স্ক্যাবিস শিশু থেকে বৃদ্ধ সবাই ঝুঁকিতে
মো. আনোয়ারুল ইসলাম
কুমিল্লার ব্রাহ্মণপাড়ায় ফের বৃদ্ধি পাচ্ছে অত্যন্ত সংক্রামক ও ছোঁয়াচে চর্মরোগ স্ক্যাবিসের সংক্রমণ। শিশু থেকে বৃদ্ধ—সব বয়সী মানুষ আক্রান্ত হচ্ছেন এ রোগে। কয়েক মাস আগে সংক্রমণ কিছুটা নিয়ন্ত্রণে এলেও সম্প্রতি আবারও রোগীর সংখ্যা উদ্বেগজনক হারে বাড়ছে।
বুধবার (১৭ সেপ্টেম্বর) উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগ, বহির্বিভাগ এবং স্থানীয় বিভিন্ন চিকিৎসা কেন্দ্র ঘুরে চিকিৎসক ও রোগীদের সঙ্গে কথা বলে এ তথ্য জানা গেছে।
গত বছরের ভয়াবহ বন্যার পর ব্রাহ্মণপাড়ায় স্ক্যাবিসের প্রাদুর্ভাব দেখা দেয়। শুরুতে এটি নীরব মহামারিতে রূপ নেয়। পরে চিকিৎসা ও সচেতনতামূলক কার্যক্রমে পরিস্থিতি কিছুটা নিয়ন্ত্রণে আসে। কিন্তু পারিবারিক ও সামাজিক সচেতনতার ঘাটতির কারণে আবারও সংক্রমণ দ্রুত বাড়ছে।
চিকিৎসকরা জানান, স্ক্যাবিস সারকোপ্টেস স্ক্যাবেই নামের এক ধরনের অণুবীক্ষণিক পরজীবি মাইট দ্বারা সৃষ্ট। আক্রান্ত ব্যক্তির সংস্পর্শে আসা, পোশাক, গামছা, তোয়ালে কিংবা ব্যবহৃত বিছানাপত্রের মাধ্যমে এটি সহজেই ছড়িয়ে পড়ে। একবার পরিবারের একজন আক্রান্ত হলে সচেতনতার অভাবে অন্য সদস্যদের মাঝেও দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে।
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা নিতে আসা চার বছরের শিশু নুসাইবার হাতে ও পায়ে ছোট ছোট পুঁজযুক্ত গোটা দেখা গেছে। তার মা আইরিন আক্তার বলেন, গোটাগুলোতে তীব্র চুলকানি ও ব্যথা হয়। এর আগেও এ সমস্যা হয়েছিল, পরে ভালো হয়েছিল। এক সপ্তাহ আগে আবার শুরু হয়েছে।
নাল্লা এলাকা থেকে চিকিৎসা নিতে আসা দেড় বছর বয়সী শিশু মুনতাহার শরীরেও র্যাশ দেখা দিয়েছে। তার মা জেসমিন আক্তার বলেন, গত বছর আমাদের পুরো পরিবার এ রোগে আক্রান্ত হয়েছিল। অনেকদিন ভালো ছিলাম। এখন আবার শুরু হয়েছে।
চিকিৎসকদের মতে, স্ক্যাবিস প্রতিরোধে শুধু ওষুধ নয়, সচেতন জীবনযাপনই জরুরি। আক্রান্ত রোগীকে আলাদা রাখা, ব্যবহৃত পোশাক ও বিছানাপত্র সঠিকভাবে পরিষ্কার করা এবং পরিবার ও সমাজে সচেতনতা বৃদ্ধি ছাড়া এ রোগ পুরোপুরি নির্মূল করা সম্ভব নয়।
ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসক ডা. অরূপ সিংহ বলেন, স্ক্যাবিস আক্রান্ত রোগীদের পারমেথ্রিন লোশন ও ক্রিম দেওয়া হচ্ছে। তীব্র চুলকানি কমাতে দেওয়া হচ্ছে অ্যান্টিহিস্টামিন। পাশাপাশি রোগীকে আলাদা রাখার এবং ব্যবহৃত পোশাক ও বিছানাপত্র ফুটন্ত পানিতে ধুয়ে রোদে শুকানোর পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মোহাম্মদ শেখ হাসিবুর রেজা বলেন, স্ক্যাবিস একটি গুরুতর সংক্রামক চর্মরোগ। দীর্ঘদিন চিকিৎসা না নিলে কিডনির জটিলতা দেখা দেওয়ার সম্ভাবনা থাকে। তাই এ রোগ নিয়ে অবহেলা করার সুযোগ নেই। চিকিৎসার পাশাপাশি সচেতনতাই এখানে মূল প্রতিরোধ ব্যবস্থা।
তিনি আরও জানান, রোগীদের চিকিৎসার পাশাপাশি সচেতনতামূলক প্রচারণা চালানো হচ্ছে, যাতে এ রোগ মহামারির রূপ না নেয়।
এই সংবাদটি শেয়ার করুন
অন্যান্য খবর
এ কেমন স্কুল ভবন!
একটি শিশুর জন্য বাড়ির পরই সবচেয়ে নিরাপদ স্থান স্কুল। কিন্তু বেশির ভাগ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের অবহেলা, অনা...
মামদানির বিজয়, মুসলিম কমিউনিটিতে আনন্দের বন্যা
বিশাল ভোটের ব্যবধানে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের সমর্থিত স্বতন্ত্র প্রার্থী অ্যান্ড্রু ক্যুমোকে পরাজিত করে...
নির্বাচনি উত্তাপে দেশ
সারা দেশে জাতীয় নির্বাচনের জমজমাট হাওয়া শুরু হয়ে গেছে। দেশের প্রধান রাজনৈতিক দল বিএনপির বেশির ভাগ প্...
মনোনয়ন বঞ্চনায় কুমিল্লা দঃ জেলা বিএনপির তৃণমূলে ক্ষোভ ও বি...
আয়েশা আক্তারকুমিল্লা-৬ (সদর ও সদর দক্ষিণ) আসনে বিএনপির মনোনয়ন ঘোষণার পর তৃণমূল পর্যায়ে ক্ষোভে ফুঁসছে...
কুমিল্লায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের যুগ্ম আহবায়ক মো. সফ...
কাজী খোরশেদ আলমবৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কুমিল্লা জেলা কমিটির যুগ্ম আহবায়ক ও নির্বাহী সদস্য মো. স...
হেমন্ত প্রবাহমান নবান্নের হাতছানি
মোঃ জাহাঙ্গীর আলম, বরুড়াআজ ২০-শে কার্তিক বাংলা ঋতু চক্রের অন্যতম হলো "হেমন্ত" কার্তিক ও&...