
প্রতিবেদক: Raisul Islam Shohag | ক্যাটেগরি: বৃহত্তর কুমিল্লা | প্রকাশ: 3 Aug 2025, 9:05 AM

কুমিল্লায় মামলা জটে পার পেয়ে যাচ্ছে মাদক ব্যবসায়িরা

নিজস্ব প্রতিবেদক
কুমিল্লার আদালতে ক্রমান্বয়ে বেড়েই চলেছে মাদক মামলার নথি। স্বাক্ষীর অনুপস্থিতি, মামলা জট ও বিচারে দীর্ঘসূত্রিতার কারণে পার পেয়ে যাচ্ছে মাদক ব্যবসায়ীরা। মাদক আইনে বিচারের জন্য নেই আলাদা ট্রাইব্যুনাল। দ্রুত বিশেষ ট্রাইব্যুনাল গঠনের মাধ্যমে মামলা নিষ্পত্তির দাবি অপরাধ বিশ্লেষকদের। কুমিল্লা জেলার ৫টি উপজেলার ১০৩ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে রয়েছে ভারত সীমান্ত। আইনশৃংখলা বাহিনীর চোখ ফাঁকি দিয়ে প্রতিদিন সীমান্ত পেরিয়ে আসছে ভয়ংকর নেশা ফেন্সিডিল, বিয়ার, গাঁজা, ইয়াবা ও মদ। রুট বদলাচ্ছে, হাত বদল হচ্ছে বারবার। ফলে ধ্বংস হচ্ছে যুবসমাজ।
মাদক ব্যবসায়ীদের অনেকেই ধরা পড়ছেন আইনশৃংখলাবাহিনীর হাতে। কিন্তু আদালতে বিচারাধীন অধিকাংশ মামলার তদন্ত শেষ হয়নি এখনো। বিচার না হওয়ায় অপরাধীরা থাকছে ধরাছোঁয়ার বাইরে, আবার অনেকেই জামিনে বের হয়ে চালিয়ে যাচ্ছে পুরোনো ব্যবসা। যা নিয়ন্ত্রণে রয়েছে প্রভাবশালীদের সিন্ডিকেটও।
১০ বিজিবি অধিনায়ক লে. কর্ণেল মীর আলী এজাজ বলেন, প্রতিনিয়ত মাদককারবারিদের গ্রেফতার ও মামলা দেয়া হচ্ছে । তবে এদেরকে দ্রুত বিচারের আওতায় নিয়ে আসতে পারলে মাদক পাচার নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব বলে তিনি জানান।
আদালত পরিদর্শক, কুমিল্লা মো. সাদিকুর রহমান বলেন, এসব মামলায় স্বাক্ষি পাওয়া যায়না। মাদক ব্যবসায়ীরা প্রভাবশালি হওয়ায় এদের বিরুদ্ধে কেউ স্বাক্ষি দিতে চায়না। মাদক মামলার পর সাক্ষী খুঁজে না পাওয়া, বাদীর অনুপস্থিতি, সাক্ষীদের অস্বীকারের কারণে এসব মামলার নিস্পত্তিতে দীর্ঘসূত্রিতা সৃষ্টি হয় বলে জানান আদালতের পিপি। তিনি বলেন, বিগত সময়ে দায়ের হওয়া মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তার বদলি ও অবসরে চলে যাওয়া এবং সাক্ষীর অভাবে এসব মামলা অনেকটা স্থবির হয়ে পড়েছে। কুমিল্লার পিপি অ্যাডভোকেট কাইমুল হক রিংকু বলেন, স্বাক্ষিদেরকে আদালতে আনার জন্য আমরা নোটিশ দিচ্ছি,পুলিশকে পাঠাচ্ছি। কিন্তু স্বাক্ষী প্রমাণ যথা সময়ে হাজির না করায় মাদক সংক্রান্ত মামলাগুলো আদালতে ঝুলে থাকে।
আদালতের পরিসংখ্যান অনুযায়ী আদালতে বিচারাধীন প্রায় ১৯ হাজার মামলা। গেল জুন মাসে দায়ের হয় ১৫৭টি মামলা এবং নিষ্পত্তি হয়েছে ৯৫টি মামলা। এদিকে বিশেষ ট্রাইব্যুনাল গঠন করে দ্রুত বিচার হলে অপরাধীরা পার পাবে না। এখন বিচার হতে হতে অনেকেই আগের অপরাধে সাজা পাওয়ার আগেই নতুন অপরাধে জড়িয়ে পড়ছে। স্বাক্ষীদের মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধি পেলে মামলার জট কমবে বলে মনে করছেন মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিপ্তরের উপ-পরিচালক। তিনি বলেন, বিধি অনুযায়ী মাদক মামলা বিচারের জন্য আলাদা কোর্ট গঠন করা হলে কমে আসবে দীর্ঘসূত্রিতা।
মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর, কুমিল্লা উপ-পরিচালক, বজলুর রহমান বলেন, মাদক দ্রব্যপরিবহন ও বেচাকেনার যে শাস্তি দ্রুত নিশ্চিত করতে পারলে তা সমাজে প্রতিফলন ঘটাতো। মাদক আইনে বিচার নিশ্চিতে দেশের সীমান্তবর্তী এ জেলায় নেই বিশেষ ট্রাইব্যুনাল। মামলা জট নিরসন ও মাদক ব্যবসায়ীদের বিচার নিশ্চিত করতে দ্রুত ট্রাইব্যুনাল গঠনের দাবি এ অপরাধ বিশ্লেষকের।
নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল আদালতের পিপি অ্যাডভোকেট বদিউল আলম সুজন, বলেন, মাদক মামলার সাজা নিশ্চিত করতে পারলে সমাজে মাদকের মাদককের ব্যবহার ও পাচার কমে যাবে।
মাদক শুধু ব্যক্তিকে নয়, শেষ করে দিচ্ছে পরিবার। আর বিচার বিলম্বের সুযোগ নিয়ে অপরাধী হয়ে উঠছে আরো ভয়ংকর। সীমান্তের শহরে আলাদা ট্রাইব্যুনাল গঠন ও বিচার দ্রুত নিশ্চিত করতে না পারলে, এই চক্র ভাঙা প্রায় অসম্ভব। ফলে মাদকের থাবায় যুব সমাজ ধ্বংস হবে বলে মনে করছেন সচেতন মহল।
এই সংবাদটি শেয়ার করুন
অন্যান্য খবর

নবীনগরে বিউটি পার্লার থেকে বিপুল পরিমাণ জাল নোট ও আগ্নেয়া...
আরিফুল ইসলাম ভূঁইয়া মিনাজব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগর পৌর সদরের আদালত পুকুরের পূর্ব পাড়ে অবস্থিত বউসাজ বিউ...

শীর্ষ বিজ্ঞানীদের তালিকায় কুবি শিক্ষক
ওবায়দুল্লাহ, কুবি প্রতিনিধিবিশ্বের শীর্ষ ২ শতাংশ বিজ্ঞানীর এক তালিকায় ¯’ান পেয়েছেন কুমিল্লা বিশ্ববিদ...

লালমাইয়ে ৫২তম গ্রীষ্মকালীন জাতীয় ক্রীড়া প্রতিযোগিতা
নিজস্ব প্রতিবেদকলালমাই উপজেলায় ৫২তম গ্রীষ্মকালীন জাতীয় স্কুল, মাদরাসা, কারিগরি শিক্ষা ক্রীড়া প্রতিযো...

‘অর্ন্তর্বতী সরকাররে আমলইে কুমল্লিা বভিাগ প্রতষ্ঠিা সম্ভব’
“কুমল্লিা নামইে বভিাগ—দাবি নয়, এটি অধকিার” এই স্লোগানকে সামনে রখেে ঢাকায় জাতীয় প্রসেক্লাবে আয়োজতি এক...

বাঞ্ছারামপুরে একদিনে ৭২ অবৈধ গ্যাস সংযোগ বিচ্ছিন্ন
ফয়সল আহমেদ খানবাঞ্ছারামপুরে অভিযান চালিয়ে প্রায় ১ লাখ টাকা জরিমানাসহ আবাসিক ও বানিজ্যকি মিলিয়প...
যুক্তরাষ্ট্রের এইচ-১বি ভিসা ফি বৃদ্ধিতে আতঙ্ক, প্লেন থেকে নে...
যুক্তরাষ্ট্রের এইচ-১বি ভিসা ফি বৃদ্ধিতে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে বিদেশি নাগরিকদের মধ্যে। বিশেষ করে ভারতীয় স...
