
প্রতিবেদক: Md. Alak Hossain | ক্যাটেগরি: বৃহত্তর কুমিল্লা | প্রকাশ: 27 Jun 2025, 6:18 AM

পরিবার নিয়ে বেঁচে থাকার লড়াইয়ে টিকে থাকতে অটোরিকশা নিয়ে ছুটছেন বাঞ্ছারামপুরের রাহিমা

বাঞ্ছারামপুর প্রতিনিধি
সন্তানদের মুখে খাবার তুলে দিতে অটোরিকশায় এক প্রান্তর থেকে অপর প্রান্তে ছুটে চলছেন ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বাঞ্ছারামপুরের রাহিমা। রিকশার চাকার সমান তালেই যেন ঘুরে তার জীবন। সকল প্রতিকূলতাকে হার মানিয়ে নিজের আত্মকর্মসংস্থানের পথ বেছে নিয়েছেন এই নারী। তার এমন কাজকে সাহসিকতার গল্প হিসেবে দেখছে প্রশাসন ও স্থানীয়রা।
বাঞ্ছারামপুরের আনাচে-কানাচে প্রায়ই অটোরিকশার চালকের আসনে দেখা যায় রাহিমাকে। সকাল হতেই বেরিয়ে পড়েন তিনি। নারী অটোরিকশা চালককে দেখে সবার মনেই আগ্রহ জাগে, কেনই বা তিনি এমন জীবিকার পথ বেছে নিয়েছেন?
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, রাহিমার স্বামী প্রবাসী। তবে দীর্ঘদিন খোঁজ নেয় না পরিবারের। অন্যদিকে চার সন্তান নিয়ে বিপাকে পড়েন রাহিমা। চালিয়ে নিতে পারছিলেন না ছেলে-মেয়েদের পড়াশোনা।
সপ্তম শ্রেণিতে পড়ুয়া ছেলের পরীক্ষার ফি জোগাড় নিয়ে একদিন শুরু হয় টানাপোড়েন। ফি দিতে না পারলে পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে পারবে না ছেলে, এমন অবস্থায় নগদ টাকার আশায় রাস্তায় নামেন তিনি।
নিজে নিজেই শেখেন অটোরিকশা চালানো। এরপর নেমে পড়েন ব্যাটারিচালিত একটি রিকশা নিয়ে। এতে প্রতিদিন ৫০০ টাকার মতো আয় করতে পারেন তিনি। তা দিয়েই কোনো রকমে চলে সংসার।
বিষয়টি নিয়ে রাহিমা বলেন, ‘কম যন্ত্রণায় তো আর রাস্তায় নামি নাই, অনেক কষ্ট সহ্য করে এই সিন্ধান্ত নিয়েছি। আমার তো বাঁচতে হবে, কে কি বললো তা দেখার প্রয়োজন নাই। কেউ তো আমার ঘরে এনে খাবার দিয়ে যায় না। যা আয় করি তা দিয়ে আমার সন্তানের পড়াশোনা চলছে, খাবার চলছে।’
রিকশা চালাতে গিয়ে কোনো সমস্যা হয় কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে রাহিমা বলেন, ‘রাস্তা ঘাটে তো কতো জনেই কত কথাই কয়। কেউ বলে কেন রিকশা চালাই, ঠিক মতো সাইড দেয় না। অযথা বিড়ম্বনা করে। তবে অনেকে সহযোগিতাও করেন। বুঝিয়ে দেন কি করে চালাতে হয়। ভালোর পাশাপাশি কিছু খারাপ মানুষ তো থাকেই। তবে খারাপের চাইতে ভালোর সংখ্যাটাই বেশি।’ স্থানীয়রা বলছেন, রাহিমাকে প্রায়ই দেখেন তারা। সবার মনেই প্রশ্ন জাগে কে এই নারী, আর কেনই বা নেমেছেন এই পথে?
স্থানীয় বাসিন্দা আবু নাঈম বলেন, রাহিমা আপাকে প্রায়ই দেখি। নারী হয়ে রিকশা চালানো আমাদের সমাজে খুব একটা দেখা যায় না। ব্যতিক্রম এক উদাহরণ সৃষ্টি করেছেন তিনি। আমরা এলাকাবাসী সব সময় ওনাকে সমর্থন দিয়ে পাশে থাকবো।
রাহিমার এমন কাজকে নারীর আত্মকর্মসংস্থানের উদাহরণ হিসেবে দেখছে প্রশাসন। তার নিরাপত্তা আর সহযোগিতায় সব সময় পাশে থাকবেন ইউএনও ফেরদৌস আরা।
বাঞ্ছারামপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ফেরদৌস আরা বলেন, রাহিমার এমন সত্যিই প্রশংসার। কারো কাছে হাত না পেতে নিজে সাবলম্বী হয়েছেন। নারীদের আত্মকর্মসংস্থানে এক অনন্য উদাহরণ রাহিমা। প্রশাসনে পক্ষ থেকে সব ধরণের সহযোগিতা করা হবে তাকে। আমার সাথে ব্যক্তিগত ভাবে যোগাযোগ রাখতে বলা হয়েছে। যে কোনো সমস্যায় আমি রাহিমার পাশে আছি।
এই সংবাদটি শেয়ার করুন
অন্যান্য খবর

বাঞ্ছারামপুরে ২ সন্তানের জননী গৃহবধূকে পিটিয়ে হত্যার অভিযো...
বাঞ্ছারামপুর প্রতিনিধি ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বাঞ্ছারামপুর উপজেলার আইয়ূবপুর ইউনিয়নের কানাইনগরে রিপন মিয়ার...

আলমগীর হোসেন চান্দলা বাজার পরিচালনা কমিটির সাধারণ সম্পাদক...
আনোয়ারুল ইসলামকুমিল্লার ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলার দক্ষিণ চান্দলা বাজার পরিচালনা কমিটির সাধারণ সম্পাদক হিস...

বুড়িচংয়ে ডাক্তার মীর হোসেনের মায়ের ইন্তেকাল
বুড়িচং প্রতিনিধিকুমিল্লার বুড়িচং উপজেলার স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সাবেক উপজেলা স্বাস্থ্য ও...

বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে হামলা মামলার আসামি ছাত্রলীগ নেতা আটক
নিজস্ব প্রতিনিধি,দাউদকান্দিকুমিল্লার দাউদকান্দি উপজেলা ছাত্র লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং বৈষম্যবিরোধী আ...

দাউদকান্দিতে নদী পুনরুদ্ধার বর্জ্যঅপসারণ ও ব্যবস্থাপনা শীর্...
নিজস্ব প্রতিনিধি,দাউদকান্দিকুমিল্লার দাউদকান্দি উপজেলার গৌরীপুর পশ্চিম সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শি...

বাঞ্ছারামপুরে শত বছরের পুরনো কবুতরের হাটে বিক্রি হয় লাখ টাক...
ফয়সল আহমেদ খানরোববার আসলেই হাট বসে। সে-ই শত বর্ষ আগে থেকে। এদত অঞ্চলের মানুষ হাটটিকে ঘিরে ব্যবসায়িক...
