
প্রতিবেদক: Alak Hossain | ক্যাটেগরি: বৃহত্তর কুমিল্লা | প্রকাশ: 1 Jun 2025, 1:08 AM

নির্বাচনী রোডম্যাপ ঘোষণা করলে সরকারের প্রতি আস্থার সংকট কেটে যাবে-ডা. তাহের

এমরান হোসেন বাপ্পি
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নায়েবে আমীর ও সাবেক সংসদ সদস্য ডা. সৈয়দ আব্দুল্লাহ মুহাম্মদ তাহের বলেছেন, যে জাতি ৪৭-এ স্বাধীনতা এনেছে, ৫২-তে মাতৃভাষার অধিকার সংরক্ষণ করতে সক্ষম হয়েছে। তারাই আবার ৭১ সালে এক হয়ে মহান মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে জীবন, রক্ত-ইজ্জত বিলিয়ে দিয়ে আরেকবার স্বাধীনতা এনে দিয়েছে। আবার সেই জাতিই ২৪ এর জুলাই-আগস্টে সকলের অংশগ্রহণে এক মহাগণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে স্বৈরাচার ও ফ্যাসিবাদকে বিতাড়িত করেছে। তারা আবার একাত্ম হয়ে জাগ্রত জনতার ব্যানারে দেশী-বিদেশী সকল ষড়যন্ত্রকে ব্যর্থ করে দিবে এবং আরেকটি নতুন বাংলাদেশ গড়ে তুলবে।
রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতি আহবান জানিয়ে ডা. তাহের বলেন, আমাদের ভূমিকা এমন হওয়া উচিত হবে না, যেদিন থেকে এদেশের মানুষ আবার হতাশ হয়ে যায়। আবার শহীদদের আত্মত্যাগ বৃথা হয়। সেই নারী, সেই শিশু, সর্বসাধারণ, রিকশাওয়ালা, ঠেলাগাড়িওয়ালা-নিঃস্ব মানুষেরা যে আত্মত্যাগ করেই মহান বিজয় অর্জন করেছিল, তাদের সেই ত্যাগ এবং রক্ত যেন বৃথা না হয়। এ জাতি বার বার সংগ্রাম করলেও কতিপয় নেতৃত্ব এবং লোভী মানুষের কারণে বঞ্চিত হয়েছিল, প্রতারিত হয়েছিল। মানুষ আশা করে, স্বাধীনতার ৫৪ বছর পর এদেশের রাজনৈতিক নেতৃত্বের ভিতরে এ চেতনাবোধ হবে, এমন ভুমিকায় তারা উত্তীর্ণ হবে, যাতে দেশের স্বাধীনতা রক্ষা করবে এবং একটি স্বাধীন জাতি হিসেবে বিশ^ দরবারে মাথা উঁচু করে দাঁড়াব। আমরা কোন বৈশক্তির কাছে মাথা নত করব না। একটি সমৃদ্ধশালী বাংলাদেশ গঠন করব। এখানে আমাদের আরও ধৈর্যের প্রযোজন, ত্যাগী মনোভাবের প্রয়োজন। এখানে ব্যক্তির চেয়ে দল, দলের চেয়ে দেশ এবং জনগণের স্বার্থ বড় হউক। এটাই রাজনীতি এবং রাজনীতিবীদদের প্রধান স্লোগান হতে হবে, আজকের এই বাংলাদেশে।
তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশ অত্যন্ত সম্ভাবনাময় দেশ। কারণ, অতীতে বারবার ষড়যন্ত্র হয়েছিল, মাথা নত করার চেষ্টা করা হয়েছিল, মানুষের সংগ্রামে সে ষড়যন্ত্র ব্যর্থ হয়েছে। আগামী দিনেও কেউ যদি মনে করেন, জোর-জবরদস্তিমূলকভাবে ক্ষমতায় গেলেই তারা সফলকাম হবে-আমি এটা বিশ^াস করি না। আমি দৃঢ়ভাবে মনে করি, স্বাভাবিক ধারায়, গণতান্ত্রিক ধারায়, নিরপেক্ষ নির্বাচনের মাধ্যমে একটি দুর্নীতিমুক্ত সমাজ বিনির্মাণের লক্ষ্যে স্বাভাবিকভাবে যে পরিবর্তন আসবে, নির্বাচন আসবে, সে নির্বাচনে যারা বিজয়ী হয়ে সরকার পরিচালনা করবে, এ মানসিকতার যে রাজনীতি, সে রাজনীতিই টিকে থাকবে। আর শর্টকার্ট কোন রাস্তায় যদি কেউ ক্ষমতায় যেতে চায়, ইতিহাস এ কথা বলে-তারা বেশি দিন ক্ষমতায় থাকতে পারেন নাই, ভবিষ্যতেও পারবে না। সুতরাং এ দেশের মানুষের আরও রক্ত দেয়ার প্রয়োজন যেন না হয়। সকল রাজনৈতিক দল ও নেতাদের প্রতি আরেকটু সহনশীল হয়ে অগ্রসর হওয়ার জন্য আমি আহবান জানাব।
অন্তর্বর্তী সরকারকে উদ্দেশ্য করে ডা. তাহের বলেন, নির্বাচনের মাধ্যমে ক্ষমতা পরিবর্তন-এটি ইন্টেরিম গভর্মেন্টের অন্যতম প্রধান কাজ। আমরা প্রধান উপদেষ্টাকে বলেছিলাম, আপনাকে নির্বাচন দিতে হবে। যদি নির্বাচন ডিসেম্বরে হয় জামায়াতের কোন আপত্তি নেই। তবে, তার আগে যদি মৌলিক সংস্কার শেষ হয়। যদি মৌলিক সংস্কার হওয়ার জন্য আরও দুই মাস বেশি সময় লাগে, তাহলে ডিসেম্বরের উপর জিদ করে পরিস্থিতি ঘোলাটে করার কোনো মানে হয় না। সুতরাং, নির্বাচন ডিসেম্বর, ফেব্রুয়ারি বা এপ্রিলেই হউক জামায়াতের আপত্তি থাকবে না। এ লক্ষ্যে নির্বাচনের রোডম্যাপ আপনি ঘোষণা করুন। আমরা দুইটি বিষয়ে রোডম্যাপ চেয়েছি-একটি নির্বাচনের আরেকটি প্রয়োজনীয় সংস্কারের। এটা আপনার মতো করেই আপনি ঘোষণা করুন। তাতেই আমি মনে করি-পরিস্থিতি প্রশমিত হবে। এক মাস বা দুই মাসের পার্থক্য এদেশের জনগণ মেনে নেবে। তবে ডিক্লারেশনটা অত্যন্ত প্রয়োজন, কারণ, আপনারদের প্রতি কিছুটা আস্থার সংকট দেখা দিয়েছে। রোডম্যাপ ডিক্লার করলে এ আস্থার সংকট অনেকটাই কমে যাবে।
শনিবার (৩১ মে) সকালে চৌদ্দগ্রাম উপজেলা জামায়াতের উদ্যোগে উপজেলার কালিকাপুর ইউনিয়নের নোয়াবাজারস্থ হোটেল খাদিজা ইন মিলনায়তনে নির্বাচনী দায়িত্বশীল সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
চৌদ্দগ্রাম উপজেলা জামায়াতে ইসলামীর আমীর মু. মাহফুজুর রহমানের সভাপতিত্বে ও সেক্রেটারি মু. বেলাল হোসাইনের পরিচালনায় দায়িত্বশীল সমাবেশে বিশেষ অতিথি ছিলেন জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় মজলিশে শুরা সদস্য ও কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা আমীর এডভোকেট মোহাম্মদ শাহজাহান, সাবেক উপজেলা আমীর ভিপি মু. সাহাব উদ্দিন, বিশিষ্ট চিকিৎসক ডা. ফজলুর রহমান মজুমদার, চৌদ্দগ্রাম পৌরসভা জামায়াতে ইসলামীর আমীর মাওলানা মুহাম্মদ ইব্রাহীম, উপজেলা জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারী আব্দুর রহিম, জামায়াত নেতা আইয়ুব আলী ফরায়েজী, মাওলানা আব্দুল কাইউম, ডা. মফিজুর রহমান, মাওলানা আব্দুল হাকিম, আলহাজ্ব শেখ আহমেদ, মাওলানা আবুল হাশেম, কাজী আব্দুল কাদের, আবুল হাসেম, ডা. মোশাররফ হোসেন বাহার, এ এন এম আবু তাহের, সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান মোস্তফা নুরুজ্জামান খোকন, সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান রুহুল আমিন, কালিকাপুর ইউপি’র প্যানেল চেয়ারম্যান জাকির মাহমুদ প্রমুখ। এ সময় শ্রীপুর, শুভপুর, কালিকাপুর ও উজিরপুর ইউনিয়নের বিভিন্ন ওয়ার্ড, কেন্দ্র ও গ্রাম কমিটির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকসহ গুরুত্বপূর্ণ নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
এই সংবাদটি শেয়ার করুন
অন্যান্য খবর

তিতাসে নিহত শীর্ষসন্ত্রাসী মামুনের দুই সহযোগী ইয়াবাসহ আটক
নাজমুল করিম ফারুক কুমিল্লার তিতাসের শোলাকান্দি গ্রামের নিহত শীর্ষসন্ত্রাসী মামুনের দুই সহযোগীকে আটক...

মুরাদনগরে অনুমতি ছাড়া এলপিজি গ্যাস বিক্রির অপরাধে ২ লাখ টাক...
বেলাল উদ্দিন আহাম্মদকুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলায় বিনা অনুমতিতে এলপিজি গ্যাস সিলিন্ডারে ভর্তি করে বাজার...

জুলাই আন্দোলনে আহত দেবিদ্বারের আবু বকর এক বছরেও স্বাভাবিক জী...
মোঃ ফখরুল ইসলাম সাগরকুমিল্লার দেবিদ্বারে ছাত্রলীগ ও যুবলীগের সশস্ত্র হামলার শিকার হয়ে এক বছর ধরে বাক...

কুমিল্লায় নির্বাচন কার্যালয়ের সামনে বিএনপির মানববন্ধন
নিজস্ব প্রতিবেদক, সদর দক্ষিণকুমিল্লা -১০ সংসদীয় আসন ভেঙ্গে ত্রিখন্ডিত করে আসন পুনর্বিন্যাসের প্রতিব...

বাঞ্ছারামপুরের সেই কোটিপতি কাজীর বিরুদ্ধে এবার নারী কেলেংকার...
ফয়সল আহমেদ খানব্রাহ্মণবাড়িয়ার বাঞ্ছারামপুর উপজেলার সোনারামপুর ইউনিয়নের কাজী হেলাল উদ্দিন...

বরুড়ায় কৃতি শিক্ষার্থীদের ফলজ গাছের চারা বিতরণ
মোঃ জাহাঙ্গীর আলম"পরিকল্পিত বনায়ন করি, সবুজ বাংলাদেশ গড়ি" এই প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে উপজেলাপ...
